দিনে ফেরি চলাচল বন্ধ, বিপাকে ঘরমুখো মানুষ

মাহামারি করোনার সংক্রমণ রোধে দিনের বেলা যাত্রীবাহী ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি। তবে রাতে পণ্যবাহী পরিবহন পারাপারের জন্য ফেরি চলাচল করবে বলেও জানানো হয়েছে। আজ শনিবার (৮ মে) থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে এ নির্দেশনা কার্যকর করা হয়েছে।

দিনে ফেরি চলাচল বন্ধ, বিপাকে ঘরমুখো মানুষ

মাহামারি করোনার সংক্রমণ রোধে দিনের বেলা যাত্রীবাহী ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি। তবে রাতে পণ্যবাহী পরিবহন পারাপারের জন্য ফেরি চলাচল করবে বলেও জানানো হয়েছে। আজ শনিবার (৮ মে) থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে এ নির্দেশনা কার্যকর করা হয়েছে।

ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে ঘরমুখো মানুষেরা। শনিবার সকাল থেকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় ভিড় করছেন হাজারো যাত্রী। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর চাপও বাড়ছে। বিআইডব্লিউটিএ সকাল থেকে ঘাট এলাকায় মাইকিং করলেও যাত্রীরা ঘাট থেকে সরছেন না।

ঘাট এলাকায় কথা হয় বরিশালগামী যাত্রী মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, সকালে বরিশাল যাওয়ার জন্য শিমুলিয়া ঘাটে আসি। ঘাটে এসে দেখি ফেরি চলাচল বন্ধ। সকালে একটি ফেরি ঘাটে ভিড়লেও ওই ফেরিতে অনেক মানুষ গাদাগাদি করে ওঠে। কিন্তু ঘাটের লোকজন জানায়, কোনো ফেরি চলবে না। এতে মানুষ নিরাশ হয়ে ঘাট এলাকায় অপেক্ষা করছে।

মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের টিআই হিলাল উদ্দিন জানান, রাত ৩টা থেকে শিমুলিয়া ঘাটে সকল প্রকার ফেরি পারাপার বন্ধ রয়েছে। ফেরি কুঞ্চলতা সকাল ৮টা ১০ মিনিটের সময় মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স, দুটি পুলিশের পিকআপ ভ্যান ও পাঁচ শতাধিক যাত্রী নিয়ে শিমুলিয়া ঘাটে ভিড়লে ওই ফেরিতে যাত্রীরা ওঠে। পরে ফেরিটি ঘাট এলাকায় ভিড়ে রয়েছে। এটি আর ছেড়ে যায়নি। যাত্রীদের নেমে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। 

তিনি আরও জানান, শিমুলিয়া ঘাটে এখনও ৪ শতাধিক ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান এবং সাতটি অ্যাম্বুলেন্স পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি তেমন একটা নেই বললেই চলে। হাজার হাজার যাত্রী ঘাটে পার হওয়ার জন্য জড়ো হয়েছে।

শুক্রবার (৭ মে) রাত ১২টার দিকে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম বলেন, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার বিকেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, ফেরিতে গাদাগাদি করে ভ্রমণের কারণেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। এ সময় তিনি দেশের মানুষকে ভিড়ের মধ্যে দোকানপাট ও শপিংমলে না যাওয়ার জন্য আহ্বান জানান। 

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, এভাবে চলতে থাকলে হাসপাতালেও জায়গা হবে না। করোনার টিকা পাওয়ার জন্য রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

শুক্রবার সকাল থেকেই দেখা যায়, সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা নিয়ে গাদাগাদি করে ঘরে ফিরছেন যাত্রীরা। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ ও যানবাহনের চাপ প্রবল আকার ধারণ করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই চাপ বাড়তে থাকে।

ঘাট কর্তৃপক্ষ জানান, ঈদকে সামনে রেখে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট দিয়ে ঘরে ফিরছে মানুষ। ভোর থেকে এ নৌরুটে মানুষ ও যানবাহনের ভিড় বাড়তে থাকে। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঘাট এলাকায় যানবাহন ও যাত্রীর চাপ আরও বেড়ে যায়।

এ ছাড়াও শুক্রবার মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যক্তিগত ও ভাড়া যানবাহনে করে ঘাট এলাকায় জড়ো হয় লাখ লাখ মানুষ।

ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধ থাকায় যাত্রীদের অনেক চাপ বেড়ে যায়। ফেরিতে বিঘ্নিত হচ্ছে গাড়ি পারাপার। এতে ঘাট এলাকায় আটকা পড়েছে ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী সহস্রাধিক যানবাহন। এসব যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে নৌরুটে বর্তমানে ১৩টি ফেরি চলাচল করছে।

বিআইডাব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহমেদ জানান, সকাল থেকেই ঘাটে দক্ষিণবঙ্গগামী মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। নদী পার হওয়ার জন্য ঘাটে প্রায় সহস্রাধিক যানবাহন অপেক্ষা করছে। লঞ্চ-স্পিডবোট বন্ধ থাকায় ফেরিতে যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপে গাড়ি পারাপারে সমস্যা হচ্ছে।