‘ফরেন বডি’ ব্যবহারে মৃত্যু হয় আনুশকার!

বন্ধুর বাসায় গিয়ে সেক্স টয় ব্যবহার করায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে রাজধানীর মাস্টারমাইন্ড স্কুলের শিক্ষার্থী আনুশকার। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

‘ফরেন বডি’ ব্যবহারে মৃত্যু হয় আনুশকার!

হত্যাকারীরা এক ধরনের ফরেন বডি ব্যবহার করায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে রাজধানীর মাস্টারমাইন্ড স্কুলের শিক্ষার্থী আনুশকার। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় সিআইডির সাইবার ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি মো.কামরুল আহসান। রাজধানীর কলাবাগানে কথিত বয়ফ্রেন্ড তানভীর ইফতেখার দিহানের বাসায় ধর্ষণের শিকার হন ওই শিক্ষার্থী।

বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্যাতনের সময় ওই শিক্ষার্থীর শরীরে এক ধরনের ফরেন বডি ব্যবহার করা হয়েছিল। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দিহানের ব্যবহৃত ফরেন বডির উৎস খুঁজতে গিয়ে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।’

গতকাল শনিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মিরপুরের পল্লবী এলাকা থেকে চক্রের প্রধান মেহেদী হাসান ভূইয়া ওরফে সানি (২৮), রেজাউল আমিন হৃদয় (২৭), মীর হিসামউদ্দিন বায়েজিদ (৩৮), সিয়াম আহমেদ ওরফে রবিন (২১), ইউনুস আলী (৩০), আরজু ইসলাম জিমকে (২২) গ্রেপ্তার করা হয়। সংঘবদ্ধ এই চক্রটির মূল টর্গেট কিশোর এবং ত্রিশোর্ধ্ব বয়সী ব্যক্তিরা। তাদেরকে টার্গেট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে সেক্স টয় বিক্রি করতো চক্রটি। তাদের স্থায়ী কোনো দোকান নেই।

অনলাইনে দেয়া মুঠোফোন নাম্বারের মাধ্যমে যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে এই সেক্স টয় ক্রয় করে থাকেন টার্গেটকৃত ক্রেতারা।

সিআইডির এই অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সেক্স টয়ের বিজ্ঞাপন দিত এই চক্রটি। বিশেষ করে যারা নিঃস্বঙ্গ জীবনযাপন করছেন তাদেরকে টার্গেট করে এসব নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রি করত চক্রটি। শিক্ষার্থীর মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী থেকে ইতোমধ্যে এই চক্রের মূলহোতাসহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম।

এই চক্রের প্রধান মেহেদী হাসান সানি ২০১৭ সাল থেকে ১০টি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিদেশ থেকে আমদানি করা নিষিদ্ধ পণ্যগুলো বিক্রি করে আসছিলেন বলে জানান তিনি। 

এই চক্রের সাথে আরও যারা জড়িত আছে তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা। সিএসন্ডএফ এজেন্টদের ঘুষ দিয়ে এই নিষিদ্ধ পণ্য দেশে আনা হতো বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

সাইবার মনিটরিং এবং সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম এ ধরনের কয়েকটি ওয়েব সাইট ও ফেসবুক পেজ শনাক্ত করা হয়। যেমন, TVC SKY SHOP BD, Sky Shop BD, TVC SKY SHOP, Asian Sky Shop বলে জানান সিআইডির সাইবার ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি মো.কামরুল আহসান।

মো.কামরুল বলেন, মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীর ধর্ষণের ফলে মৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, বিকৃত যৌনাচারের কারণে তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। আর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যায় ওই শিক্ষার্থী।

আটকদের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় বিশেষ ক্ষমতা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডি।

প্রকৌশল নিউজ/এস