বিদ্রোহী ও বিএনপি-জামায়াতের পক্ষে নেতারা, বিপাকে আ. লীগ প্রার্থী

নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা মার্কার প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিদ্রোহী প্রার্থী আর জামায়াত শিবিরের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে, বিপাকে পড়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহসীন আলী মাস্টার।

বিদ্রোহী ও বিএনপি-জামায়াতের পক্ষে নেতারা, বিপাকে আ. লীগ প্রার্থী

নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা মার্কার প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিদ্রোহী প্রার্থী, বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে, বিপাকে পড়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহসীন আলী মাস্টার।

বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, নির্বাচনের আগেই উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুরের যোগসাজশে কালো টাকার প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। সেই সাথে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা মাল্টিরোল প্লে করছেন। এছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য পলাশ, ডিডি আনোয়ার, তহিদুলসহ আরও অনেকই হিন্দু সংখ্যা লঘু ভোটারদের চাপ দিচ্ছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে ভোট না দেয়ার। 

এসব বিষয়ের সতত্যা স্বীকার করেছেন খোদ জলঢাকা পৌর যুবলীগ সভাপতি নাজমুল কবির মুকুল। তিনি বলেন, পৌর যুবলীগের একটা অংশ নৌকার বিরুদ্ধে, তারা বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থনে কাজ করছে।

তিনি আরো বলেন,  উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক দায়সারাভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করছে। দুইজন যুগ্ম আহ্বায়ক সরাসরি নৌকার বিপক্ষে কাজ করছে। তবে আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব নৌকার পক্ষে কাজ করছি।

নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন না করে বিদ্রোহী ও জামায়াতের প্রার্থীকে সমর্থনের অভিযোগের বিষয়ে পৌর শ্রমিক লীগের সভাপতি আশরাফ বলেন, এই পৌরসভা নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী নির্বাচন উপলক্ষে কোন টাকাই খরচ করছেননা। তাই তার অবস্থান কিছুটা খারাপ।

সূত্র আরও জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের আন্ত:কোন্দলের কারণে বিগত সময়ে এই পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হতে পারেনি।

জলঢাকা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদের কাছে এই আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ না করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলের প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করা হচ্ছে। তবে, যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, একটি মহল অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছে।

জাতীয় সংসদের হুইপ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, আমরা নির্বাচনে সবাইকে নৌকার পক্ষে কাজ করতে আহ্বান করছি। যারা নৌকার পক্ষে কাজ করবেন না তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে জলঢাকা পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী ইলিয়াস হোসেন বাবলু জামায়াতে ইসলামীর সমর্থনে মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পরে তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি আবার নৌকা মার্কায় নির্বাচনের আশায় আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। কিন্তু নৌকা প্রতীক না পাওয়াতে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। এবারও তিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। 

ঘনিষ্ট সুত্রগুলো জানিয়েছে, এবারের নির্বাচনে তিনি গোপনে জামায়াতে ইসলামীর সাথে আঁতাত করছেন।

উল্লেখ্য, বিগত ২০০০ সাল থেকে জলঢাকা পৌরসভায় আওয়ামী লীগ থেকে কোন স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়নি। এর অন্যতম কারণ হিসেবে স্থানীয় জনগণ মনে করেন, আওয়ামী লীগের আন্তঃকোন্দল। স্থানীয় সুত্র জানিয়েছে, সাবেক সাংসদ মো. গোলাম মোস্তফা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. আনসার আলী মিন্টু এবং সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদ হোসেন রুবেলের দলীয় সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে দুই মেরুতে অবস্থান এই আন্ত:কোন্দলের জন্য অন্যতম দায়ী।