হেফাজত নয়, তাণ্ডব চালিয়েছে সরকার : ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে হেফাজতে ইসলাম নয়, সরকারই ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে।

হেফাজত নয়, তাণ্ডব চালিয়েছে সরকার : ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে হেফাজতে ইসলাম নয়, সরকারই ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব অভিযোগ করেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে গণতন্ত্রের নামে গণতন্ত্রের কবর রচনা হয়ে গেছে। আজকে আইনের শাসনের কথা বলে আইনকে পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে। কথাটা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে চাই, ভেরি রিসেন্টলি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করতে গিয়ে সরকার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দাওয়াত করেছিলেন। তাঁর আসাকে কেন্দ্র করে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, আপনারা বেশির ভাগই যেটা বলেছেন হেফাজতের তাণ্ডব। আমি এই শব্দটার সঙ্গে একেবারেই একমত নই। তাণ্ডব তো করেছে সরকার। অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায়, পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে তারা এ তাণ্ডব করেছে এবং নাম দিয়েছে হেফাজতের তাণ্ডব।’

এই তাণ্ডবের নেপথ্য কারণ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, কারণ তারা (সরকার) একটা প্রতিবাদ দেখেছিল। একটা সংগঠনের বা একটা রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দল নয়, যে কোনো সংগঠনের অধিকার আছে ভিন্নমত প্রকাশ করার, প্রতিবাদ করার। এই প্রতিবাদ করার জন্য তারা (মুসল্লিরা) ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করছিল, সেই সময়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা এটার ওপর আক্রমণ করে। অথচ শুধু হেফাজত নয়, মোদির সফর নিয়ে বাম সংগঠনগুলোও প্রতিবাদ করেছিল। তারা এই বলে আপত্তি জানিয়েছে যে, এই সময়ে মোদির বাংলাদেশ সফর করা উচিত নয়। কারণ তাঁর দেশেই প্রচণ্ডভাবে সাম্প্রদায়িকতা চলছে, মানুষের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে, গণহত্যা করা হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মোদির সফর সম্পর্কে আমরা কিন্তু ওই সময়ে ওই সফরকে কেন্দ্র করে বিএনপির তরফ থেকে কোনো প্রতিবাদ দিইনি, কিছুই করিনি। সেই প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে সরকার ও সরকারের সন্ত্রাসীরা কমপক্ষে ২০জনকে হত্যা করেছে গুলি করে ঢাকায়, হাটহাজারীতে এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। আমরা তার প্রতিবাদ করেছিলাম। বলেছিলাম এই হত্যাকাণ্ডটি হচ্ছে সম্পূর্ণ বেআইনি এবং রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একটা মানবিক কারণে কোনো সরকার এভাবে গুলি করে হত্যা করতে পারে না। তখন সরকার এটাকে কেন্দ্র করে একদিকে যারা ইসলাম প্রচার করে, সেই সমস্ত আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করা শুরু করলেন, সেই সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আক্রমণ করা শুরু করলেন।’

এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের এবং রিমান্ডে হয়রানির অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, তার ব্যাপারে হঠাৎ করে একটা অডিও ক্লিপ ছাড়ল। তাতে কী দেখাচ্ছে? সেখানে সে (নিপুণ) নির্দেশ দিচ্ছে তাঁর কেরানীগঞ্জের কর্মীকে যে তুমি জ্বালিয়ে দাও। আপনারা খুব ভালো করে জানেন, আজকাল টেকনোলজি এমন একটা জায়গায় গেছে, যে কোনো জিনিস তৈরি করা খুব কঠিন কাজ নয়। এটা কখনই কোনো আদালতে এভিডেন্স হয়ে যেতে পারে না। সেটা তারা (সরকার) করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাঁকে বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হলো। তারপর রিমান্ডে নিয়ে গেল। ৫দিন, ৭দিন, ১০দিন সেই রিমান্ড আর শেষ হয় না। আবার তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।’

নিপুণ রায়কে ‘পরিকল্পিতভাবে’ হয়রানি ও নির্যাতন করা হচ্ছে দাবি করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘তার অপরাধ দুইটা। এক হচ্ছে তুমি মহিলা। তুমি এত অ্যাকটিভ কেন? দুই হচ্ছে তুমি হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়ে। তুমি এত কথা বল কেন আমাদের বিরুদ্ধে?’