রেজুলেশন পাশ হওয়ায় মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়বে : ড. মোমেন

জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো সর্বসম্মতিক্রমে রোহিঙ্গা মুসলিম এবং মিয়ানমারের অন্যান্ন ক্ষুদ্র জাতি- গোষ্ঠীর মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয়ে একটি রেজুলেশন পাস হওয়ার কারণে রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়বে বলে জানিয়েছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

রেজুলেশন পাশ হওয়ায় মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়বে : ড. মোমেন

জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো সর্বসম্মতিক্রমে রোহিঙ্গা মুসলিম এবং মিয়ানমারের অন্যান্ন ক্ষুদ্র জাতি- গোষ্ঠীর মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয়ে একটি রেজুলেশন পাস হওয়ার কারণে রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়বে বলে জানিয়েছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

শনিবার (২০ নভেম্বর) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর সামাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আজ দুপুরে এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত নেয়ার জন্য বিশ্বের সব দেশ এক বাক্যে সমর্থন দিয়ে  রেজুলেশন পাশ করেছে। বাংলাদেশ এতোদিন ধরে এ প্রচেষ্ঠা চালিয়েছিল। এর আগে মিয়ানমার আমাদের কখনো বলেনি তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে না। তারা আমাদের সঙ্গে চুক্তি করেছে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে বলে। কিন্তু আজ ৫ বছর পার হলেও মিয়ানমার তাদের কথা রাখেনি। আমরা আশাকরি আগামীতে তারা তাদের কথা রাখবে এবং রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে।

মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা বর্তমানে যে কুতুপালং বসবাস করছেন সেখানে ভূমি ধস, অতিবৃষ্টি ও পাহাড় ধস হয়ে মানুষ মারা যায়। তাদের মৃত্যু যাতে কমানো যায় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাষানচরে নেওয়া হবে। আর এ জন্য সাড়ে ৩শ মিলিয়ন টাকা খরচ করে আবাসন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এ পর‌্যন্ত সেখানে মাত্র সাড়ে ১৮ হাজার রোহিঙ্গা গিয়েছেন। এ মাসেই বাকি রোহিঙ্গাদের ভাষানচরে নিয়ে যাওয়া শুরু হবে।  

মন্ত্রী আরও বলেন, সেখানে যাদের আমরা নিচ্ছি তারা স্বেচ্ছায় যাচ্ছেন। কাউকে জোর করে নেওয়া হচ্ছে না। তারা সেখানে গেলে কিছু কাজ-কর্ম করতে পারবে। বর্তমানে যেখানে রয়েছে সেখানে অনেকেই মাদক বা অপরাধে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছে। যা তাদের জন্য খারাপ আমাদের দেশের জন্য খারাপ। তবে আমাদের অগ্রাধিকার থাকবে, যাতে তারা নিজ দেশে ফিরে যায়।

সীমান্তে হত্যার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ সরকার চায় না সীমান্তে একটি লোকও মারা যাক। এ নিয়ে মন্ত্রী, বিজিবি-বিএসএফ পর্যায়ে আলোচনা ও বৈঠক হয়েছে। এতো কিছু হবার পরও সীমান্তে হত্যার ঘটনা ঘটছে। এটি বাংলাদেশের জন্য দুঃখজনক ও ভারতের জন্য লজ্জাজনক।  

এ বিষয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন লোক দাবি তুলেছেন সীমান্তে যেন একটি লোকও মারা না যায়। ভারত হোক আর বাংলাদেশই হোক, কোনো লোকের সীমান্তে মৃত্যু চাই না। আশাকরি ভারত ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং জনগণ একসঙ্গে কাজ করবে, যাতে আমরা মৃত্যু শূন্য সীমান্ত গড়তে পারি।

এর আগে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধু ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন। এসময় সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেনসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।