শপথ নিলেন বাইডেন-হ্যারিস

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬ তম প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস শপথ নিয়েছেন। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে জো বাইডেনের গাড়ি বহর ক্যাপিটল হিলের উত্তর গেটের কাছে এসে থামে স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ২৭ মিনিটে। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জিল বাইডেন। স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে শপথ নেন জো বাইডেন।

শপথ নিলেন বাইডেন-হ্যারিস

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬ তম প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস শপথ নিয়েছেন। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে জো বাইডেনের গাড়ি বহর ক্যাপিটল হিলের উত্তর গেটের কাছে এসে থামে স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ২৭ মিনিটে। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জিল বাইডেন। স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে শপথ নেন জো বাইডেন। 

জো বাইডেনকে স্বাগত জানান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। উল্লেখ্য বাইডেনের গাড়ি বহরে ছিলেন প্রায় শ’ খানেক সিনেটর। এছাড়া প্রতিনিধি পরিষদের প্রায় সব সদস্যই প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানান। 

ক্যাপিটল হিলের নিরাপত্তা রক্ষীরা এ সময় তাদের স্বাগত গার্ড অব অনার প্রদর্শন করেন। 

জো বাইডেন তার স্ত্রী জিল বাইডেনের হাত ধরে এবং কমলা হ্যারিস তার স্বামী ডগলাস এমহফের হাত ধরে ক্যাপিটল হিলে প্রবেশ করেন। 

জো বাইডেন পরেছিলেন কালো স্যুট এবং কমলা হ্যারিস পরেছিলেন বেগুনি গাউন। তাদের উভয়ের মুখেই ছিল কালো মাস্ক। 

অন্যান্য প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট শপথ নেওয়ার সময় জনাকীর্ণ ক্যাপিটল হিলের উত্তর গেটের বিশাল এলাকাজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রঙ্গের পতাকায় সজ্জিত করে আয়োজক কমিটি। কারণ করোনা মহামারীর কারণে জনাকীর্ণ শপথ অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত এবং ছোট পরিসরে আয়োজন করে বাইডেনে অভিষেক আয়োজক কমিটি। 

পুরো অনুষ্ঠানে বিদায় সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং সাবেক ফার্স্ট লেডি মেনালিয়া ট্রাম্পের না থাকার বিষয়টি উচ্চারণ করেন টিভি ধারভাষ্যকরেরা। কারন নতুন প্রেসিডেন্ট এবং ফার্স্ট লেডিকে স্বাগত জানানো বিদায়ী প্রেসিডেন্ট এবং সাবেক ফার্স্ট লেডির একটি রুটিন কাজ এবং সৌজন্যতা। 

তবে বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং তার স্ত্রীর উপস্থিতি কিছুটা মুখ রক্ষা করেছে রিপাবলিকানদের। তবে ক্যাপিটল হিলের ৬ জানুয়ারির সহিংসতা সাহসিকতার সাথে মোকাবেলা করে যুক্তরাষ্ট্রের অখন্ডতা রক্ষা এবং ক্যাপিটল হিলের মর্যাদা রক্ষা করে মাইক পেন্স ইতমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বসাধারণের মন জয় করে নিয়েছেন। 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সবথেকে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ৭৯ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন। দিনের কার্যসূচী তিনি শুরু করেন নিজ অঙ্গরাজ্য ডিলাওয়ারে সংক্ষিপ্ত এক সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার মধ্য দিয়ে। সেখানে তিনি ডিলাওয়ারের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। নিজের অকালপ্রায়ত ছেলেকে স্মরণ করেন। আবেগঘন বক্তৃতায় তিনি ডিলাওয়ারের জনগনকে ধন্যবাদ জানান। কারন এই ডিলাওয়ারের সিনেটর হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন তাদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। 

শপথের আগেই বিখ্যাত সেই ঝুল বারান্দায় আসেন ডেমোক্রাটদের সিনেটর প্রতিনিধি চাক স্যুমার। এসময় প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন এবং তার স্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং তার স্ত্রী মিসেস ওয়ারা বুশ, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামাসহ সাবেক কয়েকজন ভাইস প্রেসিডেন্ট। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের সবার মুখে ছিল মাস্ক। 

স্থানীয় সময় সকাল ১১ টা ১২ মিনিটে স্বামীর হাত ধরে শপথস্থলে আসেন ইলেক্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা দেবি হ্যারিস। যিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বপ্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট।

স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ১৮ মিনিটে শপথস্থলে আসেন জো বাইডেন এবং তার স্ত্রী আমেরিকার ৪৬তম ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন।   

স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৩৪ মিনিটে ন্যাশনালগার্ডের মিউজিকের তালে তালে বেজে উঠে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত। 

এরপর মঞ্চে আসেন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত পপ গায়িকা লেডি গাগা।  তিনিও জাতীয় সংগীত পরিবেশনা করেন তার স্বকীয় ভঙ্গিতে। 

১১টা ৪১ মিনিটে শপথ নেন কমলা হ্যারিস। তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি। শপথ নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিনি জো বাইডেনের সাথে করমর্দন করেন। 

এরপর পারফর্ম করেন বিখ্যাত অভিনেত্রী ও সংগীত শিল্পি জেনিফার লোপেজ। 

ঠিক বেলা ১১টা ৫৯ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রবার্টের কাছ থেকে শপথ নেন জো বাইডেন। এসময় বাইবেলে হাত রেখে শপথ নেন। বাইবেলটি ধরে ছিলেন তার স্ত্রী জিল বাইডেন। এসময় সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। সঙ্গে বাজতে থাকে ন্যাশনাল গার্ডের মিউজিক। 

পরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জো বাইডেন। তিনি বলেন, আজকের দিন আমেরিকার দিন। আজকের দিন গণতন্ত্রের দিন। তিনি বলেন গণতন্ত্র ছিল, আছে এবং থাকবে। আবারো তিনি ঐক্যবদ্ধ আমেরিকার ডাক দেন। 

এই শপথের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ২শ ৪৪ বছরের গণতন্ত্র সুসংহত থাকলো বলে বক্তব্য রাখেন অভিষেক আয়োজক কমিটির প্রধান। 

টেলিভিশনের মাধ্যমে সরাসরি শপথ অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ সারাবিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। এমনটি অভিষেকের সাংস্কৃতিক অংশই টিভি পর্দায় দেখায় সুযোগ ছিল কোটি আমেরিকান ভক্তদের জন্য।