আইজিপি হিসেবে ড. বেনজীর আহমেদের বছর পূর্তি
বাংলাদেশ পুলিশকে জনগণের প্রথম ভরসাস্থল হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে চেঞ্জ মেকার হিসেবে গত বছরের ১৫ এপ্রিল ৩৭তম আইজিপি'র দায়িত্ব গ্রহণ করেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ। তিনি সফলভাবে দায়িত্ব পালনের এক বছর পূর্ণ করলেন ১৫ এপ্রিল।
তিনি আইজিপি'র দায়িত্ব নেয়ার পরই স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক পুলিশি ব্যবস্থা গড়ার লক্ষ্যে ঘোষণা করলেন পাঁচ মূলনীতি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, মাদক নির্মূল, অমানবিক ও অপেশাদার আচরণ বন্ধ করা ও পুলিশের সার্বিক কল্যাণ এ পাঁচ বিষয় যথাযথভাবে প্রতিপালনের জন্য তিনি সকল পুলিশ অফিসার ও ফোর্সকে নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
ড. বেনজীর আহমেদ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের প্রতিটি শাখার জন্য সুনির্দিষ্ট এওআর প্রণয়ন এবং কর্মবন্টন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের সকল সদস্যদের জন্য একই সিরিয়ালের (০১৩২) মোবাইল ফোন নম্বর চালু করেছেন।
পুলিশের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে সারাদেশকে ৬ হাজার ৯১২টি বিটে ভাগ করে প্রতি বিটে একজন কর্মকর্তা পদায়নের মাধ্যমে বিট পুলিশিং কার্যক্রম চালু করেন তিনি।
আইজিপি'র নির্দেশে পুলিশের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতা দূর করতে যুগোপযোগী পরিবর্তন আনা হয়। পুলিশের পদোন্নতি পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে গ্রহণের যুগান্তকারী সিদ্ধান্তও নেন তিনি।
তিনি প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের আধুনিকায়ন, যুগোপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন, মডিউল তৈরি ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করেন। কন্সটেবল থেকে অতিরিক্ত আইজি পর্যন্ত সকল পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের জন্য বছরে অন্তত একবারের জন্য হলেও বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি জনগণকে উন্নত পুলিশি সেবা প্রদানের জন্য হ্যান্ডস ফ্রি পুলিশিং চালু করতে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের জন্য টেকটিক্যাল বেল্ট চালু করেন। এর ফলে দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ সদস্যরা হ্যান্ডস ফ্রি রেখে জনগণকে উন্নত সেবা দিতে সক্ষম হচ্ছে।
নারীরা যাতে সাইবার বুলিংয়ের শিকার না হন তাই নারীদের জন্য নিরাপদ সাইবার স্পেস নিশ্চিত করার লক্ষ্যে “পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন” ফেসবুক পেইজ চালু করা হয়েছে। কোন নারী সইবার বুলিংয়ের শিকার হলে তিনি সহজেই এ পেইজের মাধ্যমে প্রতিকার পাচ্ছেন। প্রতিটি থানায় চালু করা হয়েছে নারী, শিশু, বয়ষ্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক।
আইজিপি'র উদ্যোগে টেকনাফে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পসমূহের নিরাপত্তায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের নতুন ইউনিট চালু করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন কেন্দ্র ভাসানচরে স্থাপন করা হয়েছে নতুন থানা।
আইজিপি গত বছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে জনগণকে সেবা দিতে চালু করেন প্যান্ডেমিক পুলিশিং । প্রণয়ন করেন একটি আন্তর্জাতিক মানের এসওপি এবং ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট প্রটোকল।
করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা সেবা দিতে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের আধুনিকায়ন এবং ২৫০ শয্যার সাধারণ হাসপাতাল থেকে ৭৫০ শয্যার কোভিড হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। পর্যায়ক্রমে এর শয্যা সংখ্যা ১ হাজারে উন্নীত করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া করা হয়। সকল পুলিশ হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসায় অভিন্ন চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার অধীনে নিয়ে আসা হয়।
ক্যান্সার ইউনিট, ক্যাথল্যাব স্থাপনসহ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে বিশ্বমানের বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েও কাজ করছেন আইজিপি।
তিনি ঢাকায় একটি বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল স্থাপন এবং অন্যান্য বিভাগীয় হাসপাতালকে আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। পুলিশ মেডিকেল কোর গঠনের কাজও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পুলিশ সদস্যদের সন্তানদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আটটি বিভাগীয় শহরে উন্নতমানের স্কুল এন্ড কলেজ নির্মাণের *উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে*।
পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট এর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। পুলিশ সদস্যদের জন্য কমিউনিটি ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যাংকিং সুবিধা সহজ করা হয়েছে।
আইজিপি'র বিশেষ উদ্যোগে পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে হ্রাসকৃত ভাড়ায় দূরপাল্লার বাস সার্ভিস চালু করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হবে। উন্নত দেশের উপযোগী করে বাংলাদেশ পুলিশকে গড়ে তোলার জন্য নিরলস কাজ করে চলেছেন পরিবর্তনের অগ্রদূত কর্মবীর ড. বেনজীর আহমেদ।
প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস