মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে নতুন মাদক এলএসডির সন্ধান


প্রকৌশল প্রতিবেদক :
মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে নতুন মাদক এলএসডির সন্ধান
  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাফিজুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে রাজধানীর একটি বাসা থেকে এলএসডি (লাইসার্জিক এসিড ডাইথ্যালামাইড) নামক মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগ।

পুলিশ জানিয়েছে, এ মাদক বিক্রির অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) একেএম হাফিজ আক্তার রাজধানীর মিন্টোরোড়ে মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হাফিজুরের তিন বন্ধু হলো নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুপল ও তুর্জ এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র আদিব। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২০০ ব্লট এলএসডি মাদক উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মাদকের মূল্য ৬ লাখ টাকা।

অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, ‘এই মাদক (এলএসডি) নেদারল্যান্ড থেকে দেশে আনা হয়। দেশে এই মাদক জব্দের ঘটনা এটাই প্রথম।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ঢাবি শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তাধীন রয়েছে। আমরা খতিয়ে দেখছি। এই মাদকের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে কিনা বিষয়টিও তদন্ত করে দেখছি।’

ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ বলেন, এটি বাংলাদেশে একেবারেই নতুন একটি মাদক। দাম বিবেচনা করলে এটি সাধারণত উচ্চবিত্তের মাদক, কারণ প্রতি ব্লট বিক্রি হতো তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকায়। বিশেষ করে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পর্যায়ে ক্রেতার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এলএসডি দামি একটি মাদক। এলএসডি মেশানো এক-একটি ছোট ছোট টুকরো ব্লটিং পেপারের দাম কয়েক হাজার টাকা।

গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা কর্মকর্তা হাফিজ বলেন, নেদারল্যান্ড হতে মেইল ও চিঠির মাধ্যমে ডাক টিকিটের মত দেখতে এই মাদকটি ৮শ’ থেকে এক হাজার টাকায় একটি ব্লট ক্রয় করতো তারা । টিম নামক এক নেদারল্যান্ড নাগরিকের কাছ থেকে টেলিগ্রাম অ্যাপ্স এর মাধ্যমে যোগাযোগ করে টাকা পাঠাতো এবং কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে এ মাদক গ্রহণ করতো তারা। তাদের একটি ফেইসবুক আইডি রয়েছে। যার নাম ‘আপনার আব্বা’ এবং একটি গ্রুপ আছে যার নাম বাটার, ব্রাউনি এন্ড বিয়ন্ড। যে গ্রুপে একহাজার সদস্য রয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা একত্রে এই ফেইসবুক আইডি ও গ্রুপের মাধ্যমে মাদকটি বিক্রি করতো।

আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি জানায়, মাদক ব্লট আকারে পাওয়া যায়। মাদকের ব্লট জিহবার নিচে বা উপরে দিয়ে নেশা করা হয়। এলএসডি সেবন করলে সেবনকারীর দৃষ্টি ও শ্রুতির মধ্যে হ্যালুসিনেশন দেখা দেবে। সেবনকারী আক্রমণাত্মক আচরণ করে। একটি এলএসডি ব্লট সেবন করলে ৮ থেকে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত এর প্রতিক্রিয়া থাকে, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর।

Lysergic acid diethylamide যাকে LSD ড্রাগ বলে। পাশ্চাত্য বিশ্বে একে hallucinogenic drug বলে। উক্ত মাদক ব্লট আকারে পাওয়া যায়। যা খুব ছোট একটি কাগজের টুকরো সাদৃশ মাদক মিশ্রিত বস্তু। উক্ত মাদকের ব্লট জিহবার নিচে বা উপরে দিয়ে নেশা করা হয়। 

সাম্প্রতিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রের আত্মহত্যার বিষয়টি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দৃষ্টিগোচর হওয়ার সাথে সাথে গোয়েন্দা রমনা বিভাগ এর ছায়া তদন্ত শুরু করে। এ তদন্তকালে ভিকটিমের কয়েকজন বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ ও গোয়েন্দা তথ্যের আলোকে নতুন ও ভয়ংকর ধরণের খঝউ মাদকের তথ্য পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য যে, Lysergic acid diethylamide এটি পcolloquially as acid এটি একটি hallucinogenic drug, যা চিন্তা পরিবর্তন করে, অনুভূতি এবং পারিপার্শ্বিক চেতনাকে পরিবর্তন করে। সেবনকারীর দৃষ্টি ও শ্রুতির মধ্যে hallucination তৈরী হয়। এটি সেবন করলে চোখের মনি বিকৃতি ঘটে, Blood Pressure ও শরীরে temperature বৃদ্ধি পায়। এর অন্য নাম LSD-25 (delysid)। এর ছদ্মনাম Methyl​enedioxy​methamphetamine (MDMA), N-Dimethyltryptamine, Psilocybin mushrooms।

প্রকৌশল/এমআরএস