বিশ্ববাজারে তেলের দাম ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ, বাড়ছে খাদ্যপণ্যেরও


আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
বিশ্ববাজারে তেলের দাম ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ, বাড়ছে খাদ্যপণ্যেরও
  • Font increase
  • Font Decrease

ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পরই তেলের দাম দাম রেকর্ড পরিমানে বেড়ে যায়। যুদ্ধের ১২তম দিনে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তেল-গ্যাসের বাইরে এই যুদ্ধের প্রভাব পড়ছে খাদ্যেপণ্যেও। বিশ্বজুড়ে তৈরি হয়েছে খাবারের সংকট।

বিশ্ব বাজারে ইরানের অপরিশোধিত তেল বিক্রি শুরুতে দেরি হওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মিত্ররা রাশিয়ার তেল আমদানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বিবেচনা করার কারণে তেলের দাম ২০০৮ সালের পর সবচেয়ে বেশি বাড়লো বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

ব্রিটিশ পর্যবেক্ষক সংস্থা দ্য অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যের পেট্রল পাম্পগুলোতে প্রতি লিটার পেট্রল বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ পাউন্ডে। এর ফলে গ্যালন প্রতি সাত ডলার বাড়তি দাম গুনতে হচ্ছে। 

রোববার দেশটিতে প্রতি লিটার পেট্রল গড়ে ১৫৫.৬২ পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে প্রতি লিটার ডিজেল বিক্রি হয়েছে ১৬১.২৮ পাউন্ডে।  সামনে দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি জারা ইন্টারন্যাশনাল। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান সুভেইন টোর হোলসেথের বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে খাবারের সরবরাহে সংকট তৈরি হয়েছে এবং দাম বেড়ে যাচ্ছে।

গ্যাস সংকটের কারণে আগে থেকেই চড়া দামে থাকা সারের দাম যুদ্ধে আরও বেড়েছে। বিশ্বের ৬০টি দেশে ব্যবসা পরিচালনাকারী জারা রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ কাঁচামাল কিনে থাকে।  

সুভেইন টোর হোলসেথের বলেন, ‘যুদ্ধের আগে থেকেই আমরা কঠিন পরিস্থিতিতে ছিলাম। কিন্তু এখন সরবরাহ ব্যবস্থায় নতুন সংকট তৈরি হয়েছে’। 

ইউক্রেনে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমারা। রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সংকটে পড়েছেন পশ্চিমারাও। এরই মধ্যে এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্ববাজারে।  

১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উঠেছে জ্বালানি তেলের দাম। সোমবার অপরিশোধিত তেলের দাম এশিয়ার বাজারে ব্যারেল প্রতি ১৩৯ ডলার ছুঁয়েছে। পরে প্রতি ব্যারেলে তেলের বাড়তি এ দাম গিয়ে স্থির হয়েছে ১৩০ ডলারে।  

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি জানিয়েছিলেন, জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল রাখতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। রাশিয়ার ওপর থেকে জ্বালানি নির্ভরতা কত দ্রুত কমানো যায়, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

তবে এসব আশ্বাসের পরও জ্বালানি তেলের দাম কোনোভাবেই কমছে না। বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে।

ইউরোপের ৪৫ শতাংশ গ্যাসের জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভর করতে হয়। যুদ্ধ শুরুর পরও সেই গ্যাস পাঠাচ্ছে রাশিয়া। কিন্তু এর শেষ যে কোথায় হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।