তথ্য সংগ্রহ আর চুরি এক নয় : তথ্যমন্ত্রী


প্রকৌশল নিউজ ডেস্ক :
তথ্য সংগ্রহ আর চুরি এক নয় : তথ্যমন্ত্রী

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘তথ্য সংগ্রহ আর তথ্য চুরি এক জিনিস নয়। তথ্য সংগ্রহ করার নিয়ম আছে, সংগ্রহ আর চুরির মধ্যে প্রভেদ ভুলে এটিকে গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয়।’

তিনি আজ দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আলহামরা নাসরিন হোসেন লুইজা সম্পাদিত ‘ছবির ভাষায় মহানায়ক বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’ অ্যালবাম প্রকাশনা উৎসবে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। অঙ্গনা ও অরণ্যের পরিচালনায় স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল এবং গ্রন্থটির সম্পাদক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

টিআইবি’র মন্তব্য ‘দেশে তথ্য প্রকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে’ এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘রোজিনার ঘটনাটি অনভিপ্রেত। সেটি আমি আগেও বলছি আজকেও একই কথা বলবো। কিন্তু দুর্নীতি বা যেকোনো বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য মন্ত্রণালয় বা যেকোনো অফিসে সাংবাদিকরা যেমন আবেদন করতে পারে, নাগরিকরাও করতে পারে। সে পদ্ধতিতে না পেলে তথ্য কমিশন আছে। সেখানে আবেদন করলে কমিশন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তথ্য দেয়ার জন্য বলে এবং গাফিলতি হলে জরিমানাসহ নানাধরণের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তথ্য কমিশন গঠনের পর এ পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজারের মতো আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে। সুতরাং দুর্নীতি বা যেকোনো তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতেই জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারই তথ্য কমিশন গঠন করেছে এবং সেভাবে মানুষ তথ্য পাচ্ছেও।’

ড. হাছান বলেন, ‘তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী পদে থাকাকালীনও আমি কোনো অফিসে গিয়ে বিনা অনুমতিতে তাদের অগোচরে কোনো গোপনীয় তথ্য নিয়ে নেই তাহলে নিশ্চয়ই আমি অপরাধী এবং সেক্ষেত্রে আমার বিরুদ্ধে সেই অফিসের কর্তৃপক্ষ যেকোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। আর সেই তথ্য যদি কোনো রাষ্ট্রীয় গোপন নথি হয় তাহলে সেটা অপরাধটা আরো বড়।

‘প্রত্যেক মন্ত্রীকে দু’টি শপথ নিতে হয়, একটি হচ্ছে মন্ত্রী হিসেবে আরেকটি রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা রক্ষা করার’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেজন্য রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা রক্ষা করা যেকোন মন্ত্রীর দায়িত্ব। টিআইবি এক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহ এবং তথ্য চুরি দুটি বিষয়কে গুলিয়ে ফেলেছে বিধায় আমি টিআইবি’র এই বক্তব্যের সাথে একমত নই।’

তবে টিআইবি’র মতো সামাজিক সংগঠনের দরকার আছে, তারা স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে, এটিই স্বাভাবিক এবং আমরাও সেটি চাই, বলেন ড. হাছান। একইসাথে তিনি বলেন, ‘তবে অতীতে দেখা গেছে টিআইবি বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার কথা বললেও অনেকক্ষেত্রে গবেষণা না করে শুধু রিপোর্ট তৈরি করে সেটিকে গবেষণা বলে চালিয়ে দেয়, যেটি সমীচীন নয়। ২০১০ সালের শুরুতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালে বনবিভাগ নিয়ে টিআইবি ২০১০ সালে যে চলতি দুর্নীতি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল, সেখানকার তথ্য ছিল পুরনো, ২০০৫ থেকে ২০০৭ সালের। এছাড়া, টিআইবি যেসব দেশ থেকে ফান্ড পায় তাদের নিয়ে কোনো রিপোর্ট করতে দেখি না।’

টিকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘টিকার জন্য একটি সূত্রের ওপর নির্ভরতা নিয়ে টিআইবি প্রশ্ন রেখেছে। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ হচ্ছে টিকা দেয়া শুরু করা দেশগুলোর প্রথম সারির অন্যতম এবং বাংলাদেশ শুরু থেকেই একটি সূত্রের ওপর নির্ভর করেনি, যত স্থান থেকে টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল সবার সাথেই যোগাযোগ করেছে। কিন্তু যখন টিকা বাজারে এলো তখন সবদেশই নিজেদের প্রয়োজনটার কথা মাথায় রেখেছে, অন্যদেশকে টিকা দেয়ার জন্য এগিয়ে আসেনি। তখন সিরাম ইনস্টিটিউট প্রথমে এগিয়ে এসেছে, বাংলাদেশ তাদের সাথে চুক্তি করেছে এবং সেই মোতাবেক টিকাও এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের সাথেও প্রথম থেকেই যোগাযোগ রাখার কারণেই এখন চীন ও অন্যান্য দেশ থেকেও টিকা আসছে। হঠাৎ করে যোগাযোগ করলে এতো তাড়াতাড়ি টিকা আসতো না।’

তথ্যমন্ত্রী ‘ছবির ভাষায় মহানায়ক বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’ অ্যালবাম মোড়ক উন্মোচনকালে গ্রন্থটিতে বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ কিছু ছবির এবং বাংলার পাশাপাশি ইংরেজিতে ছবির বর্ণনার প্রশংসা করেন এবং নিষ্ঠার সাথে দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে কাজের জন্য আলহামরা নাসরিন হোসেন লুইজা, গ্রন্থটির প্রকাশক বর্ণ প্রকাশ লিমিটেড এবং সম্পাদকের সহযোগীদেরকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান। মন্ত্রী বলেন, প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুকে নতুন প্রজন্মের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য এধরণের অ্যালবাম খুবই সহায়ক।

-বাসস