৬১ পৌরসভায় নৌকার প্রার্থী হতে চায় ৩১২ জন


প্রকৌশল নিউজ :
৬১ পৌরসভায় নৌকার প্রার্থী হতে চায় ৩১২ জন
  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠেয় দেশের ৬১ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ৩১২ জন। আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত র্নিবাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) বসছে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক। বিকাল ৪টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে   এ তথ্য জানানো হয়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বাস্থ্যসুরক্ষা বিধি মেনে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

গত ৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে গত শনিবার পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নের আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের কার্যক্রম চলে। ৬১ পৌরসভায় এবার মোট ৩১২টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। বেশিরভাগ প্রার্থীর নাম তৃণমূলের তালিকায় থাকলেও তালিকার বাইরে 'দায়িত্বপ্রাপ্ত' নেতাদের সুপারিশে অর্ধশতাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। প্রতি পৌরসভায় গড়ে পাঁচজনের বেশি দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন।

প্রথম ধাপে ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় ২৫ পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে দলীয় মনোনয়ন ফরম কেনার শর্ত হিসেবে তৃণমূলের তালিকায় নাম থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়। দলীয় পদ-পদবি ছাড়াই অখ্যাত, বিতর্কিতরাসহ বিপুল সংখ্যক প্রার্থীর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের মতো বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে এই শর্ত আরোপ করা হয়। এর ফলে প্রথম ধাপে প্রতিটি পৌরসভায় গড়ে চারজনের বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশী ফরম কেনেন। প্রথম ধাপের ২৫ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের দলীয় ফরম কেনেন ১০৬ জন।

দলীয় সূত্র বলছে, এই শর্তের সুযোগে কোথাও কোথাও একক প্রার্থীর নাম সুপারিশ করে কেন্দ্রে পাঠান দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতারা। মন্ত্রী-এমপি কিংবা প্রভাবশালী নেতাদের চাপেও একক প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানোর ঘটনাও ঘটেছে। এ কারণে একবার কোনো একক প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার পর প্রার্থী বদলের মতো পরিস্থিতিও ঘটে।

দলের নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্তে দ্বিতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনের ফরম বিক্রির শর্ত শিথিল করে তৃণমূলের তালিকার বাইরে সংশ্নিষ্ট বিভাগীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক অথবা জ্যেষ্ঠ কোনো নেতার সুপারিশ থাকলেও মনোনয়ন ফরম কেনা যাবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মূলত এই কারণেই দ্বিতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা বেড়েছে বলে জানা গেছে।

দ্বিতীয় ধাপে যেসব পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ ও কেন্দুয়া, কুষ্টিয়ার কুষ্টিয়া সদর, ভেড়ামারা, মিরপুর ও কুমারখালী, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের তারাব, শরীয়তপুরের শরীয়তপুর সদর, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী, গাইবান্ধার গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জ, দিনাজপুরের দিনাজপুর সদর, বিরামপুর ও বীরগঞ্জ, মাগুরার মাগুরা সদর, ঢাকার সাভার, নওগাঁর নজিপুর, পাবনার ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, সাঁথিয়া, ঈশ্বরদী ও সুজানগর, রাজশাহীর কাকনহাট, আড়ানী (ইভিএম) ও ভবানীগঞ্জ, সুনামগঞ্জের সুনামগঞ্জ সদর, হবিগঞ্জের মাধবপুর ও নবীগঞ্জ, ফরিদপুরের বোয়ালমারী, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা, ফুলবাড়িয়া, নাটোরের নলডাঙ্গা, গুরুদাসপুর ও গোপালপুর, বগুড়ার সান্তাহার, সারিয়াকান্দি ও শেরপুর, সিরাজগঞ্জের সদর, রায়গঞ্জ, কাজীপুর, উল্লাপাড়া ও বেলকুচি, সুনামগঞ্জের ছাতক ও জগন্নাথপুর, পিরোজপুরের পিরোজপুর সদর, মেহেরপুরের গাংনী, ঝিনাইদহের শৈলকূপা, খাগড়াছড়ির খাগড়াছড়ি সদর, বান্দরবানের লামা, নীলফামারীর সৈয়দপুর, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি, কুমিল্লার চান্দিনা, ফেনীর দাগনভূঞা, কিশোরগঞ্জের কিশোরগঞ্জ সদর ও কুলিয়ারচর, নরসিংদীর মনোহরদী, নোয়াখালীর বসুরহাট এবং বাগেরহাটের মোংলা পোর্ট।

নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো যোগ্য নেতা যেন বঞ্চিত না হন, সেজন্যই কেন্দ্রীয় নেতাদের সুপারিশে মনোনয়ন ফরম কেনার সুযোগ রাখা হয়। এতে প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা শুরুতে বেশি হলেও পরে এটা কমে আসবে এবং শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্ত মেনে দল মনোনীত প্রার্থীর পক্ষেই সবাই কাজ করবেন। তবে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দলীয় সুত্রে জানা যায়।