এক বছরেও ৬ গ্রামে যাতায়াতের রাস্তা সংস্কার হয়নি


আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা থেকে
এক বছরেও ৬ গ্রামে যাতায়াতের রাস্তা সংস্কার হয়নি
  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরের এই সময়ে ঘুর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থ জেলার আশাশুনি উপজেলার রাস্তাগুলো এখনো সংস্কার হয়নি। এরই মাঝে আবার আবহাওয়া অধিদপ্তর বড় ধরনের ঘুর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে। ফলে আতঙ্কিত এখন উপজেলার হাজার হাজার মানুষ। কারন ঝড়ের ফলে সৃষ্ট জলোচ্ছাসে তলিয়ে যেতে পারে ফসলের মাঠ।  

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নে গত বছর ২০মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে কুড়িকাহুনিয়া, হরিশখালী, চাকলাসহ পাউবো ভেড়ীবাঁধ এর বেশ কয়েটি পয়েন্ট ভেঙে গিয়ে মুহূর্তে তলিয়ে যায়। ভাঙতে থাকে রাস্তা-ঘাটসহ মানুষের বসতবাড়ি। হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের পানিতে মিশে হয় একাকার। ছিলোনা ফসলাদি লাগানোর মতো কোনো জায়গাও। 

ঝড়ের রাতে বৃদ্ধ বাবা মা, কোলের সন্তান, গরু বাছুর নিয়ে এক নির্মম দু:সময় পার করেছেন উপজেলার মানুষ। শেষ আশ্রয়টুকু হারিয়ে কেউ সাইক্লোন শেল্টারে, বাঁশের টোং বেঁধে আবার কেউ বা এলাকা ছেড়ে কাটিয়েছে ১১টি মাস। 

দীর্ঘ ১০ মাস পরেও অনেক চড়াই-উৎরাই পার করে অবশেষে লবণ পানি মুক্ত হয়েছিলো প্রতাপনগর। কিন্তু সময় বদলালেও তাদের ভাগ্য বদলায়নি একটুও। মৎস্য ঘের ও ফসল ফলানোর জমি হারিয়ে নি:স্ব কৃষক উঠে দাঁড়াতে পারিনি এখনো। মেরামত করতে পারিনি তাদের শেষ আশ্রয় স্থল ভেঙে যাওয়া ঘর। নদী গর্ভে বিলীন হয়ে বাপ দাদার ভিটা মাটি ছাড়া হয়েছে কয়েক”শ পরিবার। 

তবে সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে আবারও শুরু হয়েছে ইউনিয়নের কিছু উন্নয়নমুলক কাজ। সরকারি ও বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে কিছু রাস্তা সংস্থার কাজ অব্যাহত থাকলেও হচ্ছেনা কুড়িকাহুনিয়ার কাঁঠালতলা নামক গড়ুইমহল খালের রাস্তাটি। অথচ এই রাস্তা দিয়ে কুড়িকাহুনিয়া, শ্রীপুর, সনাতনকাটি, নাকনা, শীর্ষা, গোকুলনগর গ্রামের মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ মিটাতে হয়। নৌকা যোগে যাতায়াত করে ভোগান্তি পাচ্ছে অনেক যাত্রী। উল্লেখ্য আম্পানের পর এই গড়ুইমহল খালের রাস্তাটি সংস্কার করতে না পারাই রাস্তার ভাঙ্গন বড় হয়ে কালাম গাজী, বাক্কার গাজী, বারেক গাজী, খালেক গাজী, মৌসুমি খাতুন, শাহিনুর গাজী, জালাল গাজী, শাহিন গাজী, জবেদ গাজী, মাফুয়ার গাজী, রজব গাজী, মাকসু গাজী, আইয়ুব গাজী, মোসলেম গাজী, আমেনা খাতুনসহ ২০টি ঘরের বেশি ভিটা মাটিসহ বিলীন হয়ে গেছে। 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসনে বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে আগে প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নাকনা তেঁতুলতলা পর্যন্ত রাস্তাটি পিসের বাজেট হয়ে ঠিকাদার ও নিয়োগ হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু গড়ুইমহলের ভাঙন অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে গভীর হয়ে যাওয়ায় রাস্তাটি করা সম্ভব হয়নি। 

স্থানীয়দের দাবি দ্রুততার সাথে ইউনিয়নের এই গুরুপ্তপূর্ণ জনপদটি যদি সরকারী পদক্ষেপ বা কোনো দাতা সংস্থা সুনজর এনে নির্মাণ করে দেয় তাহলে আমরা এই দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে।